Loading Logo

Loading..

ভাজক কাকে বলে?
ভাজক নিয়ে আলোচনা।

ভাজক কাকে বলে
ভাজক শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে পড়ে ভাগের কথা। ভাগ (÷) করতে গেলে আমরা এখানে তিনটি অংশ পাই, ভাজ্য, ভ?

ভাজক কাকে বলে? 

যে সংখ্যা দিয়ে অন্য একটি সংখ্যাকে ভাগ করে, ভাগফল নির্নয় করতে হয়, তাকে ভাজক বলে। কোনো একটি সংখ্যাকে একটি নির্দিষ্ট ভাগে কয়বার ভাগ করা যাবে, এটাই ভাজক নির্দেশ করে দেয়। যেমন- ১৬ টি কলমকে যদি ৪ জনের মধ্যে ভাগ করতে হয়, তাহলে ৪ দিয়ে আমরা ১৬ কে ভাগ দিতে পারি। ৪, ১৬ কে চারভাগে ভাগ করে। তো, এই যে ৪ দিয়ে ভাগ করলাম, এই ৪ ই হলো ভাজক। ১৬ ভাজ্য, ৪ ভাগফল।

 

ভাজকের সূত্র

নিঃশেষে বিভাজ্য হলে সেক্ষেত্রে:

 

ভাজক = ভাজ্য ÷ ভাগফল

 

আর যদি নিঃশেষে বিভাজ্য না হয়, সেক্ষেত্রে:

 

ভাজক= (ভাজ্য- ভাগশেষ) ÷ ভাগফল

 

ভাগ করার ক্ষেত্রে ভাজক দিয়ে ভাজ্যকে ভাগ করা হয়। একে দুইটি চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা যায়। “÷” অথবা “/” তবে, প্রথম চিহ্নটি বেশি ব্যবহৃত হয়। আর যদি অঙ্ক হয় ভগ্নাংশ বিষয়ক তখন দ্বিতীয় চিহ্নটি ব্যবহার করা হয়।যেমনঃ ৫৬÷৭ কে আমরা দুইভাবে লিখতে পারি। 

 

৫৬ ÷ ৭ = ৮

 

৫৬ / ৭ = ৮

 

নিচে ভাজক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

 

ভাজকের চিরন্তন সত্য কিছু তথ্য

ভাজক গনিত জগৎ এর চমকপ্রদক একটি নাম। ভজকের ক্ষেত্রে যে কথাগুলি সবসময়ের জন্য প্রযোজ্য-

 

১ ই একমাত্র সংখ্যা, যা সকল সংখ্যার ভাজক। ১ দিয়ে আপনি যে সংখ্যাকেই ভাগ করেন না কেন অর্থাৎ ১ যদি ভাজক হিসেবে কাজ করে, তাহলে সবসময়ই ভাগফল ভাজ্যের সমান হবে। এবং ভাগশেষ থাকবে না।

একটি ভাগ অঙ্কে কখনো যদি ভাগশেষ থাকে তবে, তা অবশ্যই ভাজকের চেয়ে ছোট হবে।

ভাগের ক্ষেত্রে যদি ভাজ্য ও ভাজক সমান হয়, তাহলে ভাগফল সবসময় ১ হবে।

ভাজকের ক্ষেত্রে যদি ভাগশেষ শূন্য হয়, তার মানে হচ্ছে ভাজক সংখ্যাটি ভাজ্য এর মধ্যে নিঃশেষে বিভাজিত হয়। অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে ভাজক দিয়ে ভাজ্যকে ভাগ করা যায়। উদাহরণ স্বরূপ- ২০ কে ৫ দিয়ে ভাগ করলে, ৫ ভাজক। ২০ টি পেনসিল ৫ জনকে ৪ টি করে দিলে সমানভাবে ভাগ করে দিলে আর অবশিষ্ট থাকে না। গানিতিক ভাষায় আমরা তাহলে ৫ কে এখানে বলতে পারি নিখুঁত ভাজক। 

কখনে যদি ভাগ করার সময় দেখা যায় ভাজক ভাজ্যের থকে বড়, তবে উত্তর অবশ্যই দশমিকে আসবে। ভাজ্য ও ভাজকের স্থান পরিবর্তন করা যাবে না।

৫০৪০ এমন একটি সংখ্যা যার প্রচুর ভাজক রয়েছে। অর্থাৎ এমন ভাজক যা দ্বারা সংখ্যাটি নিঃশেষে বিভাজ্য হয়।

1,-1 অর্থাৎ ১,-১ এই দুইি সংখ্যা দিয়ে সংখ্যা- জগৎ এর সকল সংখ্যাকে ভাগ করা যায়। এই দুইটি সংখ্যাকে চাইলে কমন ভাজক বা নিয়মিত ভজকও বলা যায়। আর, কোনো একটি সংখ্যাকে ঐ সংখ্যা দিয়ে অবশ্যই ভাগ করা যায়। কোনো সংখ্যা যখন নিজেই নিজের ভাজক হয়, তখন সবসময় ভাগফল ১ এবং ভাগশেষ ০ হবে।

কোনো একটি নির্দিষ্ট সংখ্যাকে যদি ২ দিয়ে ভাগ করা যায় (তবে।নিঃশেষে বিভাজ্য হতে হবে), তাহলে সংখ্যাটি জোড় সংখ্যা। আর যদি সংখ্যাটিকে ২ দ্বারা নিঃশেষে ভাগ না করা যায়, তাহলে সংখ্যারি বিজোড়। তাই বলা যায়, ২ এমন একটি ভাজক, যেই সংখ্যাটি নির্দেশ করে দেয় কোনো একটি সংখ্যা জোড় নাকি বিজোড়।

ভাজক কী গুণনীয়কের মতো?

এখন আমরা এটাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্য বলতে পারি। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরোটা সত্য হয়না। যেমন আমরা 12 সংখ্যাটি নিলে, 1, 2, 3, 4, 6, 12 এই সংখ্যাগুলো দিয়ে আমার 12 কে নিঃশেষে বিভাজ্য করতে পারি। তাহলে, এ থেকে বোঝা যায় যে, 12 এর গুননীয়ক দ্বারা এটি নিঃশেষে বিভাজ্য।

 

আবার, ১৬। এই সংখ্যাটিকে যদি আমরা ১, ২, ৪ , ৮, ১৬ এই সংখ্যাগুলো দিয়ে ভাগ করতে পারি। তবে, ৫ দিয়ে ভাগ করলে ৩ বার বিভাজ্য হয়ে ১ অবশিষ্ট থাকে। এ থেকে বলতে পারি, ” সকল ক্ষেত্রে কেনো সংখ্যার গুননীয়ক ঐ সংখ্যার ভাজক, কিন্তু ঐ সংখ্যার সকল ভাজক তার গুননীয়ক নয়।”

 

ব্যাপারটা আরেকটু ক্লিয়ার করি- ১২ কে আমরা চাইলে ৭ দিয়েও ভগ করতে পারি। কিন্তু এক্ষেত্রে অবশিষ্ট থাকে ৫। তবে ৩ দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট থাকে ০।

 

ভাজকের সাথে গুনিতকের সম্পর্ক

ভাজক এর সাথে গুননীয়কের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করলাম। এখন গুনিতক নিয়ে করার পালা। গুনিতক মূলত এরকম- ৫ একটি সংখ্যা। এর গুনিতক হবে ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫….. এখন ৫ কে ১, ২, ৩, ৪, ৫…. দিয়ে আমরা যতবার- ই ক্রমিক ভাবে গুন করব, ততবারই নতুন সংখ্যা পাব। এবং এই প্রত্যেকটা সংখ্যা এমন হবে যে, সংখ্যাগুলোকে ৫ দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায়। এখানে ভাজক কাজ করে নিখুঁত ভাজক হিসেবে। এটাই ভাজকের সাথে গুননীয়কের সম্পর্ক।

 

ভাজক কী ঋনাত্মক হয়?

ভাজক এর ক্ষেত্রে আমরা মূলত সবসময় ধনাত্মক সংখ্যা দিয়েই ভাগ করে এসেছি। তাই, অনেকের ধারনা ঋনাত্মক সংখ্যাকে ভাজক হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। তবে, ঋনাত্মক সংখ্যাকেও ভাজক হিসেবে আমরা ব্যবহার করতে পারি।

 

উপরে একটু আগে বলেছিলাম, ১২ এর ভাজক ১, ২, ৩, ৪, ৬, ১২। তবে এটা কী সম্পূর্নরূপে সত্য? 

 

না। ১২ এর ভাজক সমূহ হলো- -১, -২, -৩, -৪,-৬, -১২, ১, ২, ৩, ৪, ৬, ১২

 

মোট বারোটি! ঋনাত্মক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে অর্থাৎ ঋনাত্মক সংখ্যা কে ভাজক হিসেবে ব্যবহার করলে ভাগফল হবে এরকম-

 

১২/-৩=-৪

 

এর মানে উত্তরও ঋনাত্মক হবে।

ভাজক কাকে বলে?

ভাজক এর সূত্রের বাস্তবিক প্রয়োগ

ভাজক দিয়ে ভাগ করা হয়। অর্থাৎ বোঝাতে চাইছি, কোনো একটি সংখ্যাকে একটি নির্দিষ্ট ভাগে কত বার ভাগ করা যাবে তা ভাজকই নির্ধারন করে দেবে। যেমন- ১০ টি কলম- কে ২ জনের মধ্যে ভাগ করে দিতে চাইলে, আমরা ৫ টি করে দিতে পারব।

 

১০ কে আমরা ২ জনের মধ্যে ভাগ করে।দিতে চাই, তো এখানে ২ ভাজক। তো এই যে ৫ জনের মধ্যে ভাগ করে দিলাম, এটা তো ভাজক- ই নির্ধারণ করে দিল, তাই নয় কী? তো এখম আমি চাইলে ১০ টি কলম ২ জনকে ভাগ করে না দিয়ে ৫ জনকেও ভগ করে দিতে পারতাম। তাহলে সবাই ২ টি করে কলম পেত। এখানে ৫ হতো ভাজক, আর ২ ভাগফল। তাহলে, বিষয়টি দাঁড়াল ভাজককে আমরা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারি।

 

ভাজক= ভাজ্য÷ ভাগফল

 

বা, ভাজক= ১০÷২

 

বা, ভাজক=৫ 

 

এ থেকে দেখা যায়, প্রথম সূত্রের প্রয়োগ ঘটল।

 

আবার, ১০ টি কলম যদি ৩ জনকে সমানভাবে ভাগ করে দিতে চাই, তা আমরা পারব না। কারন, ৩ দিয়ে ১০ নিঃশেষে বিভাজ্য নয়।

 

তবে, ভাগ তো করা যায়। ১০ কে ৩ দিয়ে ভাগ করলে ৩ কে ভাগফল এবং ১ কে ভাগশেষ হিসেবে পাওয়া যায়।

 

নিঃশেষে বিভাজ্য না হলে সূত্র-

 

ভাজক = (ভাজ্য – ভাগশেষ) ÷ ভাগফল 

 

= ( ১০ – ১ ) ÷ ৩

 

= ৯÷৩

 

= ৩

 

তাহলে, এই দুইটি সূত্রের বাস্তবিক প্রয়োগ আমরা পেলাম।

 

পরিশেষে

ভাজক এই সংখ্যা জগতের একটি অপরিহার্য বিষয়। ভাগ করতে গেলে ভাজকের সূত্র আসবেই। সে আপনি যেভাবেই ভাগ করতে চান না কেন, ভাজকের প্রয়োজন হবেই। তাই, ভাজক সম্পর্কে জানা জরুরি। আশা করি ভাজক কাকে বলে এ নিয়ে প্রশ্নে উত্তর পেয়েছেন।


Md Shahahazada Mia

8 Blog posts

Comments