"এই বুয়ার নাম্বারে ফোন দাও তো।
দুইদিন পর পর তার এই না আসার সিনেমা তো ভাল্লাগে না!"
টিভি থেকে চোখ সরিয়ে জামাই জিজ্ঞেস করলো, আরেকটা বিয়ে করলে কিন্তু লাভ তোমার। এই দুই দিন পর পর বুয়া নাগাবাদা দেয়। দুইজনে মিলে মিশে কাজ করবা। গল্প করারও মানুষ পাবা। খারাপ হয় না কিন্তু।
- আমার বুয়ার কাজ তোমার বউরে দিয়ে করাবা?
জামাই এবার একটু এক্সাইটেড।
- রাগ হইলা না এবার কাহিনী কি??
আসলেই কি পারমিশন দিতেছো?
- ধর্মে তো আর আমার পারমিশনের কথা বলে নাই। বলছে সমানাধিকারের কথা। দুইজনকে একভাবে দেখার কথা। ওইটা পারবা তো? ব্রাজিল হারলে পরেরদিন আর্জেন্টিনার সাপোর্টার হয়ে যাও আর তুমি করবা সমঝোতা?
- আরে বউ আর ফুটবল এক নাকি! খুব পারবো। তিনদিন তোমার তিনদিন তার। মাঝের একদিন ফুটবলের।
- ইংলটের একটা আইলাইনারের প্রাইস জানো? এক বছর অপেক্ষা করি ৮০% অফের। তাও দাম ১২০০!! দুই বউয়ের পিছে বাজেট কত রাখবা?
দেশের যে অবস্থা যেই বাচ্চা আজকে জন্ম নিছে তার মাথাপিছু ঋণই তো ২৯ হাজার টাকা!!
জামাই এবার আর কথা বলে না।
- শেষ হয় নাই। আরো শুনো। আগে তোমার ৬০০ মি.লি শ্যাম্পু একলা ৩ মাসে শেষ করতে পারতা না, আর এখন ১০০০ মি.লি শ্যাম্পুতে আমাদের ২ মাসেই টানাটানি লাগে। এখন তুমি আরেকটা বউ আনলে এক মাসেই ২/৩ হাজার টাকা শ্যাম্পুতেই যাবে!
এবারো জামাই চুপ!!
এটাতো গেলো সাবান শ্যাম্পুর হিসাব।
এবার আসো মাছ, মাংসের হিসাবে। এখনকার মেয়েদের যে নখড়া! কেএফসি বিএফসি খাইতে খাইতে আড়াই হাতের জিহ্বা হয়ে গেছে!! আর মাছ বলতে এরা বুঝে ফিস ফ্রাই, গ্রিল ফিস। তোমার তো অর্ধেক স্যালারি শুধু মাছ, মাংসের পিছনেই যাবে। বাড়ি ভাড়া কেমনে দিবা?
জামাই একটু নড়েচড়ে বসে। কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে, নবীজিদের সময় বউরা দুইটা খোড়মা খেয়ে সারাদিন পার করতো। এখনকার মেয়েদের যত খাই খাই। অল্পে ভাত ডাল খেয়ে শান্তির ঘুম দিবা। এত এত রান্নার কষ্ট করার কি দরকার!!
- হুমম!! সৌদিতে খোড়মা গাছে গাছে ঝুইলে থাকে। ঢাকা শহরে খোড়মার কেজি জানো? আর নবী রাসূলদের তাও কোন দায়িত্ব নিয়ে পাঠাইছিল!! তুমি কোন দায়িত্বটা ঘাড়ে নিছো শুনি!
তখনকার বউদের আলাদা আলাদা ঘরে রাখা হইতো। তোমার তো আলাদা রুম দেওয়ার মতোও অবস্থা নাই।
তারপর তো আছে কসমেটিকস! এক চোখের পিছনেই শেড, লেন্স, ল্যাশ, আইলাইনার, কাজল, ব্রাশ, প্রাইমার নিয়েই তো ২/৩ হাজারের প্রোডাক্ট।আর সব বাদ দিলেও লিপস্টিকের শেইড ইতো ১০/২০ টা! তার উপর দুই বছর পর এক্সপাইরি ডেট চলে আসে। দুই বউয়ের থেকে পাবা চার শ্বশুর শ্বাশুড়ি। এদের আপ্যায়ন। মাসে দুইবার দুই শ্বশুর বাড়ি গেলে পাঁচ পাঁচ দশ কেজি মিষ্টি। ঈদে দুই শ্বশুর বাড়ির গাদাগাদি শালা শালিদের সালামি। এরপর তো বাচ্চা হবে, বাচ্চার ডায়পার, দুধ। তারপর স্কুলে যাবে। বই খাতা, টিফিন, বেতন, টিচার এগুলা করতে করতে তো বাপ দাদার ভিটামাটি সব বেইচা ফেলবা!!
তারপর ঝগড়াঝাঁটি হবে, কথা কাটাকাটি হবে, চুলাচুলি হবে এক পর্যায় প্লেট, গ্লাস ভাঙ্গাভাঙ্গি হবে..........
- থামো! থামো! থামো। মাফ চাই। বুয়ার নাম্বারটা দাও আমি চেষ্টা করে দেখি। লাগলে বুয়ারে বাসা থেকে উঠায়ে নিয়ে আসবো।
- হুহহহ! একটু আগে এটা বললেই হইতো। 🥱
(লেখক এর নাম জানা থাকলে জানাবেন প্লিজ)
