Boring
This post has received widespread feedback from users for being monotonous and overly repetitive.
সপ্তপুত্র খাদক পেত্নী হলো প্রেতবত্থু গ্রন্থের এক ভয়ংকর প্রেত। এই পেত্নী তার নিজের সন্তানদের মাংস খেতো, যা সত্যিই লোমহর্ষক। পালি ভাষায় 'সপ্পুতত্র' অর্থ 'নিজের সন্তান' এবং 'খাদক' অর্থ 'ভক্ষণকারী'। এই পেত্নীর গল্প কর্মফলের এক নির্মম দৃষ্টান্ত।
বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে, এই পেত্নী পূর্বজন্মে এক মহিলা ছিল যে তার স্বামীর সাথে ঝগড়ার সময় রাগের বশে নিজের সন্তানদের মেরে ফেলেছিল। সে এতটাই নিষ্ঠুর ছিল যে সন্তানদের মাংসও খেয়েছিল। এই ভয়ানক কর্মের ফলস্বরূপ, মৃত্যুর পর সে এমন এক প্রেতযোনিতে জন্ম নেয় যেখানে তাকে প্রতি জন্মে নিজের সন্তানদের জন্ম দিতে হয় এবং তারপর তাদের খেতে হয়। এই চক্র অবিরাম চলতেই থাকে, যতক্ষণ না তার পাপের ফল সম্পূর্ণ শেষ হয়।
এই পেত্নীর বর্ণনা থেকে বোঝা যায় যে, কর্ম কতটা শক্তিশালী হতে পারে এবং খারাপ কাজের ফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে। সাপ্পুতত্র খাদক পেত্নীর গল্প মানুষকে সতর্ক করে এবং ভালো কর্ম করার অনুপ্রেরণা যোগায়। এটি বৌদ্ধ দর্শনের এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, যা কর্মফল এবং পুনর্জন্মের ধারণাকে তুলে ধরে।
পালি ত্রিপিটকের খুদ্দকনিকায় অংশের প্রেতবত্থু গ্রন্থে বিভিন্ন প্রেতের বিবরণ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে 'পুতিমুখ প্রেত' একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। পুতিমুখ প্রেত এমন এক শ্রেণির প্রেত, যাদের মুখ পচে দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। এই প্রেতরা তাদের পূর্বজন্মের কুকর্মের ফলস্বরূপ এমন যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা ভোগ করে।
সাধারণত, এই প্রেতরা এমন সব মানুষ ছিলেন যারা জীবদ্দশায় মিথ্যা কথা বলা, অন্যের ক্ষতি করা বা কুৎসিত বাক্য প্রয়োগের মতো অশুভ কাজ করেছিলেন। তাদের এই পাপের ফলস্বরূপ মৃত্যুর পর তাদের মুখ থেকে পচা গন্ধ বের হয়, যা তাদের জন্য চরম কষ্টদায়ক। এই অবস্থা তাদের কর্মফলের এক প্রত্যক্ষ প্রতিফলন, যা বৌদ্ধধর্মে কর্মের গুরুত্বকে তুলে ধরে। প্রেতবত্থু এই ধরনের গল্পের মাধ্যমে মানুষকে সৎ জীবনযাপন এবং পুণ্যার্জন করার জন্য উৎসাহিত করে। এই বর্ণনাগুলি নৈতিক শিক্ষার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
প্রেতবত্থু গ্রন্থের "শুকরমুখ প্রেতবথু" (Sukaramukha Pretavatthu) সূত্রে এক অদ্ভুত দর্শন প্রেতের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। এই প্রেতের মুখ ছিল শুকরের মতো, শরীর ছিল মানুষের, এবং সে সর্বদা ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় কাতর থাকত। ভিক্ষুরা এই প্রেতকে দেখে ভগবান বুদ্ধের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে, বুদ্ধ তার পূর্বজন্মের কর্মের কথা ব্যাখ্যা করেন।
বুদ্ধ জানান, এই প্রেতটি তার পূর্বজন্মে একজন ব্রাহ্মণ ছিল, যে নিজে অত্যন্ত লোভী ও কৃপণ ছিল। সে অন্যকে দান-ধ্যান করতে বাধা দিত এবং ভিক্ষুদের অপমান করত। বিশেষ করে, সে যখন ভিক্ষুদের খাবার গ্রহণ করতে দেখত, তখন তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করত এবং শুকরের সাথে তুলনা করত। তার এই কটু বাক্য এবং অপরের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের ফলস্বরূপ মৃত্যুর পর সে শুকরমুখ প্রেত হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। তার শুকরের মতো মুখ ছিল তার মন্দ বাক্যের প্রতীক।
এই সূত্রটি দেখায় যে, শুধু কর্ম নয়, বরং আমাদের মুখের কথাও, অর্থাৎ বাক্যকর্মও কর্মফলের কারণ হয়। অন্যের প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ এবং কটু বাক্য প্রয়োগ করলে তার ফলস্বরূপ দুঃখময় জীবন লাভ হতে পারে। এই সূত্রটি মানুষকে সংযত বাক্য ব্যবহার করতে এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে উৎসাহিত করে। এটি বৌদ্ধধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যে, মন, বাক্য ও শরীরের দ্বারা কৃত সকল কর্মেরই ফল ভোগ করতে হয়।